দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ক্রমান্বয়ে আরো পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে এবং আজ কিছুটা দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। চলুন দেখে নেই সিস্টেম ও বঙ্গোপসাগর এর বর্তমান অবস্থা কি? ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, দুপুর ১২ টা
গতকাল থেকেই ধীরে ধীরে নিম্নচাপটি সামান্য দুর্বল হতে দেখা যায়। পরবর্তীতে আজ সকালে আরও দুর্বল হয় এবং সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। এর বর্তমান বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩৫কিমি/ঘন্টা যা দমকা হাওয়াসহ ৪৫ কিমি/ঘন্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এর কি আর শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা আছে? আর কোথায় যেতে পারে? বাংলাদেশে এর প্রভাব কি?
.
একটি সিস্টেম শক্তিশালী হতে হলে যে কয়েকটি নিয়ামকের প্রয়োজন পড়ে (যেমন, সমুদ্রপৃষ্ঠে অনুকূল তাপমাত্রা (>২৬°সে) , ন্যূনতম ভার্টিক্যাল শিয়ার, যথেষ্ট জলীয় বাষ্প সরবরাহ, অনুকূল MJO, অনুকূল বায়ুমণ্ডলীয় ওয়েভ, অনুকূল সমুদ্রপৃষ্ঠের পোটেনশিয়াল এনার্জি, নিরক্ষীয় শান্ত বলয়, Velocity Potential/Outflow ইত্যাদি) এর মধ্যে ভার্টিক্যাল শিয়ার ও নিরক্ষীয় শান্ত বলয় ছাড়া প্রায় সবই অনুকূল রয়েছে। এবং লঘুচাপটি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে উপকূল আঘাত করতে যাচ্ছে।
.
বর্তমানে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে বেশিরভাগ প্যারামিটার অনুকূল থাকলেও ভার্টিক্যাল শিয়ার মাঝারি থেকে উচ্চ রয়েছে এবং ইন্টার ট্রপিক্যাল কনভারজেন্স জোন অনুপস্থিত। মূলত ইন্টার ট্রপিক্যাল কনভারসেন্স জোন বা নিরক্ষীয় শান্ত বলয় দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে থাকায় উক্ত নিয়ামক গুলোর কারণে সেখানেই অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে এবং ভারত মহাসাগরে নতুন করে দুইটি ট্রপিকাল সিস্টেম তৈরি হয়েছে যা সাইক্লোন সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি নিরক্ষীয় বঙ্গোপসাগর এলাকায়ও পরিবেশ কিছুটা অনুকূল চলমান রয়েছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগর এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক এর মধ্যে দুইটি নিয়ামক অনুপস্থিত থাকায় এবং এখন ট্রপিকাল সাইক্লোন মৌসুম না হওয়ায় এবং সিস্টেমটি দ্রুতই উপকূলে আঘাত করায় বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি সুযোগ পাবে না শক্তিশালী হওয়ার।
বরং এটি ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে হতে শ্রীলঙ্কা অতিক্রম করতে পারে আগামী ২৪ ঘণ্টায় । এবং সামনে পরিবেশ কিছুটা প্রতিকূল হয়ে যেতে পারে। আর এটির বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই, আর এর কোন সরাসরি প্রভাবও বাংলাদেশে পড়ার সম্ভাবনা নেই, ইনশাআল্লাহ। তবে এর দূরবর্তী প্রভাবে দেশের উপর আংশিক থেকে মূলত মেঘলাা পরিস্থিতি চলতে পারে আগামীকাল পহেলা পহেলা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর বাংলাদেশের আকাশ পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে তবে কুয়াশা বেল্ট বাড়তে পারে। এটি মূলত শ্রীলংকা হয়ে আবার সাগরের দিকে চলে যেতে পারে এবং পুরোপুরি দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
নিচে দেখে নিন আমেরিকান আবহাওয়া মডেল অনুসারে লঘুচাপটির বর্তমান অবস্থান এবং স্যাটেলাইট চিত্রে বর্তমান অবস্থান
GFS CURRENT WIND PATTERN AT 850HPA
Advertisements