বর্তমানে ভূমিকম্প হয়ে উঠেছে অন্যতম ভয়ের কারণ। অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ এর পূর্বাভাস করা সম্ভব হলেও ভূমিকম্পের পূর্বাভাস এর খুব বেশি চর্চা দেখা যায়নি। এতে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস নিয়ে রয়েছে বেশ অনাস্থা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আগেই সিরিয়া ও তুর্কির ভূমিকম্পের কথা জানাতে পেরেছিল “Frank Hoogerbeets” নামক ব্যক্তি যিনি “Solar System Geometry Survey” এর গবেষক। মূলত সোলার সিস্টেমের গ্রহসমূহের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে এবং জ্যামিতিক হিসাব নিকাশের মাধ্যমে তিনি এই পূর্বাভাস দেন। এবং তা কয়েক দিনের ভিতরেই মিলে যাওয়ায় জন্ম দিয়েছে নানা আলোচনার।
.
Solar System Geometry Survey এর নতুন এক গবেষণায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জানানো হয়েছিল যে, মার্চের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে গ্রহসমূহের নির্দিষ্ট জ্যামিতিক প্যাটার্ন অনুযায়ী অবস্থানের কারণে পৃথিবীর ভূগর্ভ চঞ্চল হয়ে উঠতে পারে। আর এতেই টেকটনিক প্লেটের নাড়াচাড়ায় ঘটতে পারে বেশ কিছু ভূমিকম্প। তারা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন, মূলত পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত এলাকাগুলো এবং নিউজিল্যান্ড এর নিকটবর্তী দ্বীপ সমূহ এবং আমেরিকার পশ্চিম উপকুল এই ভূমিকম্পের জন্য প্রধান ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে ৩-৪ এবং ৬-৭ মার্চ বেশি সম্ভাবনা উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়াও ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল অন্যত্রও হতে পারে উল্লেখ করেন। তারা জানিয়েছিল যে, উক্ত ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭–৮ মাত্রার ভিতরে হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। আর ইতিমধ্যেই নিউজিল্যান্ডের নিকটবর্তী দ্বীপ পুঞ্জে ৩-৪ তারিখে অন্তত ২টি শক্তিশালী (M 6+) ভূমিকম্প হয়। এখন ৬-৭ তারিখে কি হয় এটাই দেখার বিষয়।
.
এবার আসি , এতে বাংলাদেশের ঝুঁকি কেমন?
বরাবরই ফল্টলাইনের অবস্থান বাংলাদেশের নিকটবর্তী অঞ্চলে হওয়ায় বাংলাদেশ ভূমিকম্পের অন্যতম ঝুঁকিতে রয়েছে বেশ দীর্ঘসময় ধরেই। তাই এরূপ ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের সম্ভাবনার কথা বরাবরই বিভিন্ন ভূতত্ত্ববিদরা জানিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের গবেষকরাও বাংলাদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আশঙ্কা করেছেন। সবকিছু বিবেচনায় যদি এই ভূমিকম্পটি উক্ত সময়ে বাংলাদেশের নিকটবর্তী এলাকায় ঘটে তাহলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। যেহেতু উক্ত সংস্থা ” Solar System Geometry Survey” কর্তৃক জানানো হয়েছে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল উল্লেখিত এলাকার পরিবর্তে অন্যত্রও হতে পারে, তাই বাংলাদেশের জন্যও যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে বলা চলে। তাই আগে থেকেই সতর্ক থাকা ভালো। ভূমিকম্পের আগে, ভূমিকম্প চলাকালে ও ভূমিকম্পের পরে কি করবেন তা দেখুন এখানে
.
নোট: ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের উদ্দেশ্য আতঙ্ক ছড়ানো নয় বরং ভূমিকম্প নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। যেহেতু উক্ত সংস্থার পূর্বাভাস ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে তাই তাদের নতুন গবেষণাটি আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরেছে। আর ভূমিকম্প যে উক্ত সময়ে বাংলাদেশেই হবে তার কোন নিশ্চায়তা নেই। বতবে অবশ্যই বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে বরাবর এর মতোই।
ধন্যবাদ সকলকে, © Bangladesh Weather Observation Team- BWOT
ছবিঃ A.. S. M. Maksud Kamal, SpringerLink
Advertisements