Advertisements


ধেঁয়ে আসছে মহা বৃষ্টিবলয় ঢল | ১১-১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৪

বৃষ্টিবলয় ঢল ২০২৪
বৃষ্টিবলয় ঢল এর মোট বৃষ্টির সম্ভাব্য গ্রাফিকঃ BWOT

ধেঁয়ে আসছে দেশের দিকে প্রবল শক্তিশালী মহা বৃষ্টিবলয় ঢল ২০২৪ ।  এটি একটি পূর্ণাঙ্গ বেশ শক্তিসম্পন্ন বৃষ্টি বলয়।

ঢল সাধারণত সেইসকল বৃষ্টি বলয়কে নামকরণ করা হয়, যেই বৃষ্টি বলয়ে অল্প সময়ে দেশে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়ে থাকে।
এটিও একটি নিরব বৃষ্টিবলয়, মানে এই বৃষ্টি বলয়েও দেশের অধিকাংশ এলাকায় সামান্য বজ্রপাত হতেপারে।

[নোট: এই আপডেটটি মুলত সম্ভ্যাব্য আবহাওয়া প্যারামিটার সমুহ বিশ্লেষনের উপর ভিত্তি করে সতর্কতামুলক একটি পূর্বাভাস। এর সাথে পূর্ববর্তী বৃষ্টিবলয় “শ্রাবণী” এর তুলনা করে অতিরঞ্জিত চিন্তাভাবনা থেকে বিরত থাকুন। বৃষ্টিপাতের দিক থেকে বৃষ্টি বলয় শ্রাবণীর তুলনায় এই বৃষ্টিবলয়ে কম বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এবং এই পূর্বাভাস প্রাকৃতিক কারণে যেকোনো সময় পরিবর্তনযোগ্য। অবশ্যই যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এর তথ্য অনুসরণ করুন।]

বৃষ্টিবলয় ঢল ২০২৪ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ 

এটি চলতি বছরের ১২ তম বৃষ্টিবলয়,ও এই বছরের চতুর্থ মৌসূমী বৃষ্টিবলয়। এই বৃষ্টি বলয়ের প্রথমদিকে দেশের পূর্ব, দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল ও পরবর্তীতে সারাদেশে সক্রিয় হতে পারে।


সর্বাধিক সক্রিয়: চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা বিভাগের সকল জেলা। দক্ষিণে বেশি।
অধিক সক্রিয়ঃ ময়মনসিংহ, ঢাকা বিভাগের অধিকাংশ এলাকা।
মাঝারি সক্রিয় : রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সকল জেলা।
কম সক্রিয়ঃ নেই

নাম : মহা বৃষ্টিবলয় ঢল
টাইপ : পূর্ণাঙ্গ বৃষ্টিবলয়। মানে এই বৃষ্টি বলয়ে সারাদেশে বৃষ্টি হতে পারে ইনশাআল্লাহ।

কাভারেজ : সমগ্র বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান ও ভারতের প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকা।

ধরন : মৌসূমী বৃষ্টিবলয়।
সময়কাল : ১১ ই সেপ্টেম্বর টু ১৬ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ সম্ভাব্য।
সর্বাধিক সক্রিয় : ১২ টু ১৫ ই সেপ্টেম্বর।

কালবৈশাখী : নেই
বজ্রপাত : অপেক্ষাকৃত কম।
বন্যা : আছে, সিলেট ও চট্টগ্রাম(মধ্য-দঃ) বিভাগের নিচু এলাকায় সাময়িক।
একটানা বর্ষন : আছে।
সিস্টেম : মনসুন অক্ষরেখা যুক্ত সার্কুলেশন/স্থল লঘুচাপ আছে।
ঝড় : এই বৃষ্টি বলয়ে কোন উল্লেখযোগ্য ঝড়ের সম্ভাবনা নেই ইনশাআল্লাহ।
সাগর : বেশিরভাগ সময়েই কিছুটা উত্তাল থাকতে পারে।

নোট : বৃষ্টিবলয় ঢল চলাকালীন সময়ে বেশি সক্রিয় এলাকায় বেশিরভাগ সময়ই আকাশ মেঘাছন্ন থাকতে পারে। এবং উক্ত এলাকার অধিকাংশ বৃষ্টিপাত হতে পারে একটানা দীর্ঘস্থায়ী। যদিও মাঝেমধ্যে বিরতি নিতে পারে।

বৃষ্টিবলয় ঢল ২০২৪ এর বিস্তারিত বিবরণ 

এই বৃষ্টিবলয় আগামী ১১ ই সেপ্টেম্বর সকালে চট্টগ্রাম বিভাগ দিয়ে দেশে প্রবেশ করবে এবং আগামী ১৬ ই সেপ্টেম্বর রাজশাহী হয়ে দেশ ত্যাগ করতে পারে।

*এই বৃষ্টি বলয় চলাকালীন সময়ে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের নিচু এলাকায় সাময়িক বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। মূলত আগস্টের বন্যার মত এত ভয়াবহ না হলেও নিচু এলাকা যথেষ্ট ঝুকিপূর্ণ।

বৃষ্টিবলয় ঢল চলাকালীন সময়ে দেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু এলাকায় মৃদু তাপপ্রবাহ সক্রিয় থাকতে পারে এবং কিছুটা ভ্যাপসা গরম অনুভূত হতে পারে। এবং অন্যত্র বেশ আরামদায়ক তাপমাত্রা থাকতে পারে।

ঢল চলাকালীন সময়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর অধিকাংশ সময়েই বায়ুচাপের তারতম্যের কারনে কিছুটা উত্তাল থাকতে পারে।
ঢল চলাকালীন সময়ে বেশি সক্রিয় স্থানে রোদের উপস্থিতি তেমন পাওয়া যাবেনা ইনশাআল্লাহ।

মেঘের অভিমুখ: অধিকাংশ এলাকায় দক্ষিণ পশ্চিম হতে উত্তর পূর্ব দিকে ও পরবর্তিতে পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে।

বন্যার সতর্কতাঃ দেশের উপকূলে প্রচুর বৃষ্টির জন্য বৃষ্টি জনিত জলাবদ্ধতা তৈরী হতে পারে। এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের নিচু এলাকায় পুনরায় বন্যার আশঙ্কা আছে।

পাহাড়ধ্বস এর আশঙ্কা : পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহারধ্বসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বজ্রপাতঃ এই বৃষ্টি বলয়ে দেশের অধিকাংশ এলাকায় হালকা বজ্রপাত হতে পারে।

আসুন একনজরে দেখেনেই মহা বৃষ্টি বলয় ঢল চলাকালীন সময়ে দেশের কোন বিভাগে গড়ে কত মিলিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ও বৃষ্টি বলয়ের ৬ দিনে কোন বিভাগে গড়ে কত দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।

ঢাকা ১৬০-২৫০ মিলিমিটার, গড়ে ৪দিন
খুলনা ২৫০-৩৫০ মিলিমিটার গড়ে ৫ দিন
বরিশাল ৩০০-৪৫০ মিলিমিটার গড়ে ৬ দিন
সিলেট ৩০০-৩৫০ মিলিমিটার গড়ে ৫ দিন
ময়মনসিংহ ১৫০-২২০ মিলিমিটার গড়ে ৪ দিন
রাজশাহী ১০০-১৫০ মিলিমিটার গড়ে ৩ দিন
রংপুর ৮০-১৫০ মিলিমিটার গড়ে ৩ দিন
চট্টগ্রাম ৩৫০-৫৫০ মিলিমিটার গড়ে ৬ দিন।

আরো জানুনঃ বৃষ্টি বলয় কি? এর ধরন কি কি?

আসুন একনজরে দেখে নেই, বৃষ্টি বলয় ঢল ২০২৪ চলাকালীন সময়ে আপনার জেলায় গড়ে কত মিলিমিটার বৃষ্টি হতেপারে।

জেলার নাম। বৃষ্টির পরিমান (মিমি)


সিলেট। ৩৫০+

সুনামগঞ্জ। ৩৩০+

হবিগঞ্জ। ৩৪০+

মৌলভীবাজার। ৩৩০+

রংপুর, ১১০+

দিনাজপুর, ১০০+

ঠাকুরগাঁও। ৮০+

পঞ্চগড় ১২০+


নীলফামারী ১০০+

লালমনীরহাট। ১০০+

কুড়িগ্রাম। ১২০+

গাইবান্ধা ১০০+

জয়পুরহাট। ১১০+

নওগাঁ ৯০+


বগুড়া ১৪০+

চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ১৪০+

রাজশাহী ১৪০+

নাটোর। ১৬০+

সিরাজগঞ্জ। ১৭০+

পাবনা ১৮০+

খুলনা(উত্তর) ২৮০+
খুলনা (দক্ষিন) ৩৮০+

সাতক্ষীরা (উত্তর) ২৮০+
সাতক্ষীরা(দক্ষিণ) ৩৬০+

বাগেরহাট(উত্তর) ২৮০+
বাগেরহাট(দক্ষিন) ৩৭০+

যশোর, ২৫০+

নড়াইল। ২৪০+

মাগুরা ২১০+

ঝিনাইদহ। ২৪০+

চুয়াডাঙ্গা ২৩০+

মেহেরপুর। ১৯০+

কুষ্টিয়া ১৯০+

বরিশাল, ৩৯০+

পিরোজপুর। ৩৭০+

ঝালকাঠি ৩৭০+

পটুয়াখালী ৩৯০+

বরগুনা ৪০০+

ভোলা ৪০০+

চট্টগ্রাম, ৫০০+

ফেনী ৫০০+

লক্ষ্মীপুর ৫০০+

চাঁদপুর। ৪২০+

কুমিল্লা দক্ষিণ ৪৫০+
কুমিল্লা উত্তর ৩৫০+

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৩০০+

খাগড়াছড়ি ৩৭০+

রাঙ্গামাটি ৩৭০+

বান্দরবান। ৫০০+

কক্সবাজার। ৫৫০+

নোয়াখালী, ৫০০+

ঢাকা ২০০+

গোপালগঞ্জ। ৩০০+

মাদারীপুর। ২৫০+

শরিয়তপুর ২৬০+

ফরিদপুর। ২৫০+

রাজবাড়ী। ২০০+

মানিকগঞ্জ। ১৯০+

মুন্সীগঞ্জ। ২১০+

নারায়ণগঞ্জ। ২০০+

নরসিংদী ২৫০+

গাজীপুর। ২০০+

টাঙ্গাইল। ২০০+

কিশোরগঞ্জ। ৩০০+

ময়মনসিংহ। ২০০+

জামালপুর। ১৮০+

শেরপুর। ২২০+

নেত্রকোনা ২৬০+
কলকাতা (পশ্চিমবঙ্গ) ৩৫০+ মিলিমিটার।
২৪ পরগনা ৩৭০+

বৃষ্টি বলয় এর পূর্বাভাসে যা বিবেচনায় রাখতে হবে :

*এখানে দেওয়া বৃষ্টির পরিমান একটা গড় ধারনা মাত্র, স্থানভেদে এর পরিমান কিছুটা হেরফের হতেপারে। ও দেশের কোন কোন ক্ষুদ্র এলাকায় কিছুটা বেশি বৃষ্টি হতে পারে ও কোন ক্ষুদ্র স্থানে বৃষ্টি অনেক কম হতে পারে।
নোট : প্রাকৃতিক কারনে বৃষ্টি বলয় ঢল এর সময়সূচি কিছুটা পরিবর্তন ও এর শক্তি কিছুটা হ্রাস, বৃদ্ধি বা বিলুপ্ত হতেপারে।

পূর্বাভাস তৈরি : Bangladesh Weather Observation Team – BWOT
Graphic: BWOT।

[Copyright : বাংলাদেশে BWOT একমাত্র আবহাওয়া সংস্থা যারা বৃষ্টি বলয় নামকরন করে বৃষ্টিবলয়ের পূর্বাভাস করার প্রচলন করে। তাই BWOT ব্যাতিত আর কেউ বৃষ্টি বলয় নামকরণ করে পূর্বাভাস করে বিভ্রান্তি তৈরি করা থেকে বিরত থাকুন]

*DISCLAIMER: এটা শুধুমাত্র আমাদের গবেষণায় পাওয়া তথ্য, কোনো সরকারি পূর্বাভাস বা সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি না এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত অফিসিয়াল পূর্বাভাসের জন্য সবাই বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করুন।
এবং এই পূর্বাভাসের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করুন, অথবা তাদের পূর্বাভাস অনুসরণ করুন।

বৃষ্টি বলয় ঢল নামকরণ : BWOT Weather,
ঢল প্রথম নামকরণ করা হয় জুলাই ২০১০ সালে।

ধন্যবাদ : Bangladesh Weather Observation Team- BWOT
আপডেট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, রাত ১১:০০ টা

Advertisements


Advertisements